তোমাকে পাওয়া হলো না...(নষ্ট ক্যাঁপাচিটার)
লিখেছেন লিখেছেন shaidur rahman siddik ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ১২:১৫:২২ রাত
তোমাকে পাওয়া হলো না.........!
মনা সকাল বেলা চায়ের কাপটা হতে নিয়ে চায়ে দু একটা চুমুক দিতেই মুঠোফোনটা বেজে উঠতে থাকলো.......
রিসিভ করেতেই ওপার থেকে আওয়াজ চলে আসলো.....
-জানো আমাদের এতদিনের স্বপ্নের উপর আকা স্বপ্নগুলি বাস্তবে পরিনত হতে যাচ্ছে। আজ আমি একটা ভালো কর্ম পেলাম। আমি জানি মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের স্বপ্ন পূরন করবেই। তোমাকে আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না। সামনেই তোমাকে ঘরে তুলে আনতেছি...
কথাগুলি শুনে মনার চোখের কোনায় বিন্দু বিন্দুু করে অঝোর ধারায় জল গড়তে লাগলো,আর মনে মনে ভাবতে লাগলো ওকে আমি কিভাবে বুঝ দেই...!! এতদিনের সৃতির চাদরখানা কি করেই আগুনে পুড়িয়ে ফেলি। সামনের মাসেই আমার অন্য জায়গায় বিয়ে হতে যাচ্ছে, বাবার পছন্দকরা পাত্রের সাথে। কেনে আমি তাকে এই খবরটা আগে জানালাম না! আজ ও অনেক খুশি বাট একটি কথাই ওর সবকিছুই দুমরে মুচরে ফেলে দিবে....
সজল ওপারের জবাব না পেয়ে বলতেছে... কি হলো কথা বরছো না কেন, থমকে আছো কেন, তোমার খুশি খাকার কথা, কিন্তুু অমন করে আছো কেন...??
..ওহ্ সরি, অন্য মনস্ক হয়েছিলাম সরি..!
-তাহলে কখন আসতেছো বলো....তোমার ওয়াদা অনুযায়ী আজ আমি একটা ভালো চাকুরি পেলাম, আজ আমার কর্তব্য শেষ। এখন তোমার ওয়াদা পালন করার দায়িত্ব এসেছে শুরু করো আজ থেকে। আজ যে কোন উপায়েই তোমাকে আসতেই হবে আমার কাছে।...ওহ্ না থাক আমি বাইক নিয়ে দাড়িয়ে থাকবো আর তুমি চুপটি কর বাইকের পিছনে এসে বসবে আর আমি উড়াল দিয়ে নিয়ে আসবো আমার ঘরে ঘরনি করে......
কথাগুলি শুনে মনার কান্নার আওয়াজটুকু নিস্তব্দতার দুয়ারের দিকে চলতে থাকলো।
সজল বাইক নিয়ে যথা স্হানে দাড়িয়ে রইলো আর মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করতে লাগলো। ইতি মধ্যেই কালো বোরকা পড়ে মনা সজলের গাড়ীর দিবে অগ্রসর হতে লাগলো.... আর সজল বোরখার আবরনের ভিতরের লজ্জামাখা মুখের দিকে চাহিয়া মুচকি হাসতে লাগলো আর বলতে লাগলো....এই তো... এই তো আমি...তারাতারি আসো আর সহ্য হচ্ছে না।
সজল পকেট থেকে দু জোড়া চুরি মমনার হহাতে পরিয়ে দিয়ে গাড়ী স্ট্রাড করলো আর মনা বুকে দুরু দুরু কাপুনি অবস্হায় বাইকের পিছনে বসে সজলের ঘাড়ের উপর একটি হাত রেখে চেপে বসলো।
খুশিতে সজল গাড়ীর ক্যাপাচেটি অনেকগুন বাড়ীয়ে দিয়ে বাতাসের বেগে ছুটতে শুরু করলো আর বলতে লাগলো....জান আজ কত খুশিই না লাগছে... কারন একদিন তুমি আর আমি ঠিক এভাবেই স্বপ্নগুলি দেখতাম, আর আল্লাহ ঠিক তেমনেই করে বাস্তবে পরিনত করছে....শুকরিয়া আল্লাহর কাছে।
চলে যাচ্ছে শত কিলো গতিতে ভালবাসার ভরপুরে গাড়ীখানা....., হঠাৎ হার্ড ব্রেক কষে বসলো সজল...
নিস্তব্দতা চারদিকে, তার বাইকের সামনে ও পিছনে আরো চারটি বাইক। লোকগুলিকে হেলমেট পেড়া অবস্হায় বেশি একটা চেনা যাচ্ছে না। তবুও সজল মনে আন্দাজ করেই নিলেন... এরা কেউ নয়, মনার আপন ভাই আর তার বন্ধুরা।
হঠাৎ করেই সজলের মাথার মাঝখানে হকস্টিকের আঘাত পরলো, ওমনিই সজল মাঠিতে লুটে পড়ে গেলো। আর চোখে আবছা আবছা একটু করে দেখকে পেলো... মনার হাত ধরে তারা জোর করে বাইকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে...
মনা চিৎকার করে বলছে... সজল তোমার ওয়াদা পালন হয় নি....তোমার কাজ এখনও বাকি আছে।
.. সজল মাঠি থেকে উঠে দাড়িয়ে মনার দিকে ছুটতে শুরু করলো.. তার ইচ্ছে শেষ নিশ্বাঃস থাকা পর্যন্ত মনাকে তার কাছে নিয়ে আসার চেষ্টা চালিয়ে যাবে....
আবার দুটি আঘাত পড়েগেলো মাথায় ও পিঠে,,,,তাতে বেশি কাবু করতে পারল না সজলের শরীরকে। দৌড় দিয়ে মনার হাতটা টেনে ধরলো.... তখনেই আঘাতের উপর আঘাত পড়তে লাগলো সজলের সর্বাঙ্গে...
তারপর সজলের দেওয়া মনার হাতে পরিহিত চুড়িগুলি মটমট করে ভাংতে লাগলো এবং চুরির টুকরোগুলি মনার হাতে ঠুকে ফুলকি মেরে রক্ত বাহির হয়ে দুজনের চারটি হাত লাল রঙে পরিনত জয়ে গেল।
আবারও বিশাল জোরে জোরে আঘাত পড়তে লাগলো সজলের শরীরে....
সজলের সর্বাঙ্গো এবার নিথর হয়ে পড়ে রইলো মাঠিতে। হাত পা কোন কিছুই নড়াতে পারছে না। শুধুই দু চোখ দিয়ে তাকিয়ে দেখতে পারছে....
মনাকে তারা সাবাই জোড় করে টেনে হিচরে নিয়ে যাচ্ছে... আর মনা পিছনের তাকিয়ে সজলকে দেখতেছে ও কান্না করতেছে...
...তাছাড়া আর কিছুই করার নেই সজলের এবং মনার।
সময়েই সজলের মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে লাগলো, আর নিথর দেহখানা কাপতে শুরু করলো।
সজলের জানটা চলে যাচ্ছে প্রায়...শুধু মুখ আর চোখ দুটিই একটু বলতে পারে আর দেখতে পারে.....
লাল টকটকের চোখ দিয়ে সজল তাকিয়ে আছে মনার চলে যাওয়ার দিকে....
আর লাল রন্জিত মুখ দিয়ে শুধু বলছে......
....আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি...
আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি....
তুমি আমার ছাড়া অন্য কারো হতে পারো না..!!
...আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি...জান।
নিথর দেহখানা পড়ে রইলো.....
#নষ্ট
বিষয়: বিবিধ
১০২৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন